ELDER BROTHER
Turkey most popular series
বাহার
এক নারীর জীবন-সংগ্রামকে উপজীব্য করে, তুরস্কের সমাজিক প্রেক্ষাপটে নির্মিত হয়েছে ধারাবাহিক নাটক "বাহার"। 'দোরুক' আর 'নিসান' নামের ছোট্ট দুই সন্তানকে ঘিরেই মা 'বাহারের' জীবন। কয়েক বছর আগে এক দুর্ঘটনায় বাহার তার স্বামী ' সার্পকে ' হারায় কিন্তু স্বামীর অনুপস্থিতি সে তার সন্তানদের বুঝতে দেয় না। বাহার সবসময় নিজের ও তার স্বামীর পরিচয়ের গল্প, প্রেম - বিয়ের কথা এমনভাবে তার সন্তানদের শোনায়, যেন ওরা বাবাকে কাছে না পেলেও তার সুন্দর স্মৃতিগুলো নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে। গল্পে দেখা যায় বাহারের সন্তানেরা বাবাকে নিয়ে এক কল্পনার মাঝে বাস করে, যেন বাবা ওদের সাথেই আছে। বাহার তার সন্তানদেরকে সর্বোচ্চ ভালোবাসা আর সুন্দর শৈশব উপহার দিতে চায়, কারণ খুব ছোট বেলায় বাহারের মা তাকে ছেড়ে গিয়েছিলো। পরবর্তীতে নিয়তির নির্মম পরিহাসে, দ্বিতীয় সন্তান দোরুক গর্ভে থাকা অবস্থায় তার জীবন থেকে হারিয়ে যায় ভালোবাসার মানুষ 'সার্প'। একেবারে একা হয়ে যায় বাহার।
জীবিকার তাগিদে বাহার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসাবে কাজ শুরু করে। সন্তানদের নিয়ে ছোট্ট একটা বাসায় তার টানাপোড়েনের সংসার। কিন্তু ভাড়া দিতে না পারায় বাড়িওয়ালা বের করে দেয় তাদের। অগত্যা বাহারকে অল্প ভাড়ায় শহরের এক অরক্ষিত,অনিরাপদ মহল্লায় বাসা ভাড়া নিতে হয়। এখানেই বাহারের পরিচয় হয় পাশের ফ্ল্যাটের এক মেয়ের সাথে। 'জেইদা' নামের এই স্বাধীনচেতা সংগীতশিল্পী যাকে উগ্রভাবে জীবন যাপন করতে দেখা যায়। এমন এক পরিবেশে সমাজের নেতিবাচক দিকগুলো থেকে গা বাঁচিয়ে সন্তানদের সুন্দরভাবে বড় করে তোলাই হয়ে দাঁড়ায় বাহারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। ধীরে ধীরে সন্তানদের সখ্যতা তৈরি হয় বাড়িওয়ালার ছেলে আরিফের সাথে। ব্যর্থ প্রেমের বেদনায় কাতর এই যুবক একসময় বাহার ও তার সন্তানদের ভালো বন্ধু হয়ে ওঠে। শিক্ষিত,সুদর্শন, গম্ভীর আর দায়িত্ববান এই ছেলেটির মাঝে বাবাসুলভ ভালোবাসা খুঁজে পায় নিসান ও দোরুক।এদিকে কারখানার এক সহকর্মী 'ইয়েলিয'এর সঙ্গেও বাহারের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বাহারের সুখে-দুঃখে আরিফ আর ইয়েলিযকে সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসাবে দেখা যায়।
আর্থিক সমস্যার কারণে সরকারি সহায়তা পেতে চেষ্টা করে বাহার, কিন্তু জানতে পারে পরিবার তার দেখাশোনা করেনা, কেবল এই শর্তেই সে আর্থিক সাহায্য পেতে পারে। তাই এই ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে, বাহার দীর্ঘ বিশ বছর পর মায়ের সাথে দেখা করতে যায়। তাই নাটকের শুরুতে বাহারকে নিঃসঙ্গ দেখানো হলেও, এই পর্যায়ে দেখা যায় বাহারের পরিবার আছে কিন্তু এতদিন পরিবারের সাথে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিলো। স্বামীর বন্ধুকেবিয়ে করে পরিবারকে ছেড়ে গেছে বলে বাহার তার মায়ের উপর অভিমান করে থাকে। দেখা যায় দ্বিতীয় স্বামী ও ছোট মেয়ে শিরিনকে নিয়ে বাহারের মায়ের সুখের সংসার। তবে গল্পে এও জানা যায় বাহারের সৎবোন শিরিন অত্যন্ত ঈর্ষাপরায়ণ এবং বাহারের স্বামী সার্প নিখোঁজ হওয়ার পেছনে তারই হাত ছিলো।
এরই মাঝে হঠাৎ একদিন বাহার জানতে পারে সে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। ডাক্তারের নির্দেশ এই রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করতে হলে পরিবারকে প্রয়োজন। কিন্তু ঝামেলা শুরু হয় সন্তানের অধিকার নিয়ে বাহার তার মায়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করলে। সৎ বোন শিরিনের হিংসুটে আচরণ এবং মায়ের অবহেলায় সে চেষ্টা শেষপর্যন্ত বৃথা যায়। সন্তানদের নিয়ে আগের ঠিকানায় ফিরে যায় বাহার। কিন্তু এবার তার সঙ্গী হয় সৎ বাবা 'এনভার'। এদিকে বাহার জানতে পারে তার স্বামী সার্পের সঙ্গে অন্য কোন নারীর প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তখন স্বামীর উপর প্রচন্ড ঘৃণা জন্মায় বাহারের। বাহারের ধারণা হয়, সার্প ভালোবাসার নামে দিনের পর দিন তার সঙ্গে প্রতারণা করে গেছে। অন্যদিকে দেখা যায় শিরিনই সেই নারী! কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শিরিনের প্রেম ছিলো একপেশে। বরং শিরিনই সম্পর্ক গড়ার জন্য সার্পকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতো। শিরিনের ছলচাতুরি কখনোই প্রশ্রয় দিতো না সার্প।
যারা যারা আমাদের পেইজে বাহার, মারিয়া, হুররাম, ফেরিহা তূরকি জনপ্রিয় সিরিজ গুলো দেখছেন তাদের উদ্যেশ্যে বলতেছি।